ইন্দোনেশিয়াতে বিয়ে করার নিয়মসহ বিস্তারিত জানুন

ইন্দোনেশিয়াতে বিয়ে করার নিয়ম জেনে নিন

দেশের গন্ডি পেরিয়ে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বিয়ে করার ব্যাপারটা আসলেই একটা কঠিন কাজ। অনেক সময় সঠিক নিয়ম না জানার কারনে অনেক জুটি অকালেই সম্পর্ক ভাঙতে বাধ্য হয়। অথবা সারাজীবন সম্পর্ক টা ফোন কল আর ভিডিও কলেই সীমাবদ্ধ থাকে।

ইন্দোনেশিয়ায় বিয়ের নিয়মঃ

বর্তমানে বাংলাদেশে বসবাস করছেন, সোসিয়াল মিডিয়া তে কোনো ইন্দোনেশিয়ান বা অন্য দেশের মেয়ের সাথে সম্পর্ক হয়েছে। এখন ভাবছেন বিয়ে করবেন কিন্ত কোনো উপায় পাচ্ছেন না। অথবা কোনো এক সময় দেশের বাহিরে কাজ করতেন আর সেই সময়ে কোনো ইন্দোনেশিয়ান মেয়ের সাথে সম্পর্কে জড়িয়েছেন। কিন্ত সরকারি আইন মেনে বিয়ে করেননি। অথবা শরিয়ত আইনে বিয়ে করেছেন কিন্ত বিয়ের বৈধতা পাননি।
বাচ্চা আছে কিন্ত বাচ্চা বাবার নাম পায়নি কারন বিয়ে ইন্দোনেশিয়া বা বাংলাদেশে কোনো দেশেই রেজিস্ট্রার হয়নি। উপরের কোনো একটা কারন যদি আপনার সাথে মিলে যায়, তাহলে এই পোস্ট টি আপনার জন্য।

যদি কোনো ইন্দোনেশিয়ান মেয়ের সাথে সম্পর্ক থাকে আর বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন তাহলে দুইটা উপায়ে সরকারি আইন মেনে বিয়ে করতে পারেন।

১) ইন্দোনেশিয়ায় গিয়ে বিয়ে করা

যদি ইন্দোনেশিয়াতে এসে আপনার পছন্দের মানুষকে বিয়ে করতে চান সেক্ষেত্রে আপনার জন্য ৩ টা ডকুমেন্টস প্রয়োজন।

I) বাংলাদেশ থেকে অবিবাহিত সনদপত্র বা সিংগেল সার্টিফিকেট নিতে হবে

এখানে ক্লিক করে জেনে নিন কিভাবে অবিবাহিত সনদপত্র বা সিংগেল সার্টিফিকেট নিতে হয়

II) ইন্দোনেশিয়ান টুরিস্ট ভিসা ( ২ মাস মেয়াদি)

III) বাংলাদেশী আইডি কার্ড বা ইংরেজিতে জন্ম নিবন্ধন। দুইটার মধ্য যেকোনো একটা থাকলেই হবে যেটা আপনার পাসপোর্টের সাথে মিল আছে।

ইন্দোনেশিয়ায় বাংলাদেশ এম্বাসি থেকে অনুমতি পত্রঃ

উপরে উল্লেখ করা তিনটি ডকুমেন্টস রেডি হলেই আপনি বাংলাদেশ থেকে ইন্দোনেশিয়ান টুরিস্ট ভিসা ব্যবহার করে
ইন্দোনেশিয়া তে আসতে হবে। তারপর ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী জাকার্তায় অবস্থিত বাংলাদেশ এম্বাসিতে গিয়ে আপনার অবিবাহিত সনদপত্র জমা দিতে হবে।

বাংলাদেশ এম্বাসি আপনার অবিবাহিত সনদপত্রটি ভেরিফাই করবে। সেখানে প্রায় ৫/৭ দিন লাগবে। তারপর বাংলাদেশ এম্বাসি আপনার অবিবাহিত সনদপত্র টি ভেরিফাই করার পরে যদি ঠিক থাকে তাহলে বাংলাদেশ এম্বাসি থেকে আপনাকে সি এন আই বা ইন্দোনেশিয়াতে বিয়ে করার জন্য ফাইনাল ছাড়পত্র বা অনুমতি পত্র দেবে।

বাংলাদেশ এম্বাসি থেকে ছাড়পত্র নেওয়ার সময় ২৫০,০০০ রুপিয়া সরকারি ফ্রি প্রদান করতে হবে যেটা বাংলাদেশী টাকায় ১৫০০ থেকে ১৮০০ টাকার সমপরিমাণ।

অবশেষে আপনি ফাইনাল ছাড়পত্র পেয়ে গেলেন। তারপরই আপনি ইন্দোনেশিয়ায় আপনার পছন্দের মানুষকে বিয়ে করতে পারবেন।

২) বাংলাদেশেই ইন্দোনেশিয়ান মেয়ের সাথে বিবাহঃ

এই পদ্ধতি অনুসরণ করে আপনি যদি আপনার ইন্দোনেশিয়ান সঙ্গী কে বাংলাদেশে এনে বিয়ে করতে চান সেক্ষেত্রে আপনার ইন্দোনেশিয়ান সঙ্গী কে বাংলাদেশের টুরিস্ট ভিসা নিয়ে বাংলাদেশে আসতে হবে।

তিনি জাকার্তায় নিযুক্ত বাংলাদেশের এম্বাসি তে গিয়ে বাংলাদেশের টুরিস্ট ভিসার জন্য আবেদন করবে। ভিসা পেলে তিনি বাংলাদেশে চলে আসবে। আসার আগে ইন্দোনেশিয়া থেকে তার বাবা মা এর অনুমতি পত্র নিয়ে আসবে যে উনি বাংলাদেশে আসছেন বিয়ে করার জন্য।

এছাড়া উনার ইন্দোনেশিয়ান আইডি কার্ড এবং ফ্যামিলি কার্ড এর কপি সাথে নিয়ে আসবে। বাংলাদেশে আসার পরি আপনি এবং আপনার ইন্দোনেশিয়ান সঙ্গী যাকে বিয়ে করতে যাচ্ছেন তাকে সাথে নিয়ে বাংলাদেশে নিযুক্ত ইন্দোনেশিয়ান এম্বাসি তে যাবেন৷ তাদের সাথে আলোচনা করবেন যে আপনারা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে চলেছেন। যদি নতুন কোনো আইন থাকে তাহলে ইন্দোনেশিয়ান এম্বাসি আপনাকে জানাবে।

তারপর আপনি এবং আপনার ইন্দোনেশিয়ান সঙ্গী যাকে আপনি বিয়ে করতে চাচ্ছেন, আপনাদের উভয়ের পাসপোর্টের কপি ব্যবহার করে একজন সরকারি উকিলের মাধ্যমে বিয়ে করে নেবেন। বিয়ের কাজ শেষ হলে কাজি থেকে বিয়ের সার্টিফিকেট সংগ্রহ করবেন বাংলা এবং ইংরেজি ভার্সন দুইটাই।

ইংরেজি সার্টিফিকেট টা পরবর্তীতে বাংলাদেশ আইন মন্ত্রণালয় এবং ফরেইন মিনিস্ট্রি থেকে সত্যায়িত করে একজন উকিল দিয়ে নোটারী করিয়ে নেবেন।

এবার ফাইনালি আপনার বিয়ের সার্টিফিকেট ইংরেজি ভার্সন টার একটা কপি ঢাকার ইন্দোনেশিয়ান এম্বাসি তে জমা করবেন।

ইন্দোনেশিয়ান এম্বাসি তে বিয়ের সার্টিফিকেট জমা করলে এম্বাসি থেকে পুনরায় আপনাদের একটা সার্টিফিকেট দিবে ইন্দোনেশিয়ান ভাষাতে। আর এই পর্যন্তই আপনার সমস্ত কাজ শেষ হলো।

এবার নিশ্চিন্তে মনের মানুষকে সাথে নিয়ে সংসার করুন।

অবশেষে কোনো তথ্যের প্রয়োজন হলে কন্টাক আস অপশনে গিয়ে যোগাযোগ করুন অথবা এস এম এস করুন ফেসবুক বা ইন্সটাগ্রামে।